📰 স্বাধীন প্রতিদিন প্রতিবেদক:
ঢাকা, বাংলাদেশ - ৩ অক্টোবর ২০২৫
মূল প্রতিবেদন:
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচন ঘিরে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও আরও ১৫ জন পরিচালনা পর্ষদের প্রার্থীর হঠাৎ মনোনয়ন প্রত্যাহারের ঘটনায়। প্রত্যাহারকারী প্রার্থীদের অনেকেই বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির হাই-প্রোফাইল নেতাদের সন্তান।
সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন তামিম ইকবাল। তার ভাষ্য, “এটা একটা নির্বাচন নয়, এটা ক্রিকেটকে অপমান করার একটা প্রক্রিয়া। আমরা এর অংশ হতে পারি না।”
তামিমের এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের ১৪ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
সরে দাঁড়ানো উল্লেখযোগ্য প্রার্থীরা হলেন:
• ওমর শরীফ মো. ইমরান -- বিএনপি নেতা বরকতউল্লা বুলুর ছেলে
• মির্জা ইয়াসির আব্বাস -- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের ছেলে
• ইসরাফিল খসরু -- আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে
• সাঈদ ইব্রাহিম আহমদ -- সালাহউদ্দিন আহমদের ছেলে
এছাড়াও, বিএনপি-সমর্থিত আরও কয়েকজন ক্লাব কর্মকর্তা ও ক্রীড়া সংগঠক তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এতে বিসিবির নির্বাচন কার্যত একপাক্ষিক হয়ে পড়ছে বলে বিশ্লেষকদের মত।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরপরই বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল নির্বাচন কমিশনের কাছে পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে:
• নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করা হয়েছে
• নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিত করা হয়েছে নির্দিষ্ট প্রার্থীদের জন্য
• ভোটার তালিকা ও ক্লাব প্রতিনিধিত্বে পক্ষপাত রয়েছে
• বেশ কয়েকটি পদ এখন অপ্রতিদ্বন্দ্বিতভাবে পূর্ণ হতে যাচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক নির্বাচনী চেতনার পরিপন্থী।
বিশ্লেষকদের মতে, বিসিবি নির্বাচন ঘিরে এই সংকট শুধুমাত্র প্রশাসনিক নয় -- এটি বাংলাদেশে ক্রীড়া ও রাজনীতির মধ্যকার বাড়তে থাকা সম্পর্কের ইঙ্গিত। যেখানে রাজনৈতিক পরিচয় বা পক্ষপাতিত্ব সরাসরি প্রভাব ফেলছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাটির ভবিষ্যতের ওপর।
“বিসিবি একটি স্বশাসিত ক্রীড়া সংস্থা -- কিন্তু বাস্তবে তা এখন আর হচ্ছে না,” -- এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা।
বিষয়সম্ভাব্য প্রভাবনির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তপুনঃতফসিল না হলে বিরোধী পক্ষ হয়তো আইনি পথে যেতে পারেনির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাপ্রশ্নের মুখে পড়বে, যদি বেশিরভাগ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকেবিসিবির ভাবমূর্তিরাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়লে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশ্ন উঠতে পারেজাতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎসিদ্ধান্ত গ্রহণে পেশাদারিত্ব না থাকলে খেলোয়াড় উন্নয়ন ও ক্রিকেট পরিচালনায় দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।
ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করেন, তামিম ইকবালের নেতৃত্বে যে প্রত্যাহারপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, তা একা একজন ক্রিকেটার নয় -- গোটা ক্রিকেট প্রশাসন ব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীনতার প্রতিচ্ছবি।
যদি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও নির্বাচন কমিশন দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে পরিস্থিতি সামাল না দেয়, তবে এই নির্বাচন ক্রিকেটের চেয়ে রাজনীতির মঞ্চ হয়ে উঠবে -- যার দায়ভার বহন করবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্রিকেটাররা।
📰 আরও খবর: www.shadinpratidin.com
📣 শেয়ার করুন | মতামত দিন
মন্তব্য করুন