Shadin Pratidin
প্রকাশ : Oct 2, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

মাকে হত্যার অভিযোগে ৩৬ বছর পর বাবার বিরুদ্ধে মেয়ের মামলা

🕘 প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০২৫ | স্বাধীন প্রতিদিন নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় মায়ের রহস্যজনক মৃত্যুর ৩৬ বছর পর বাবার বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন মেয়ে। অভিযুক্ত ডা. শেখ বাহারুল আলম বাহার একজন প্রভাবশালী চিকিৎসক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

অভিযোগকারী শেখ তামান্না আলম খুলনার সোনাডাঙ্গা থানাধীন কেডিএ এপ্রোচ রোড এলাকার বাসিন্দা। তিনি ১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, সোনাডাঙ্গা আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।


মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৯৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর রাতে খুলনার খ্যাতনামা গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সামসুন্নাহার মিলনকে গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়।

তামান্নার দাবি, তার মা আত্মহত্যা করেননি -- তাকে হত্যা করা হয়েছে। আর হত্যাকারী ছিলেন তারই বাবা, ডা. শেখ বাহারুল আলম বাহার।

তামান্না অভিযোগ করেন, প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে তার বাবা-মায়ের বিয়ে হলেও পরবর্তীতে ডা. বাহার পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। তার মা এর বিরোধিতা করলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। মেয়েদের নিয়ে অস্ট্রিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেও সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় ১৩ নভেম্বরের রাতেই।

সেদিন রাতের ঝগড়ার পর ভোরে ডা. বাহার তামান্নাকে ডেকে ড্রইংরুমে নিয়ে যান, যেখানে তিনি তার মায়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। বাবার নির্দেশে গলার রশি খুলে নিচে নামানো হয় দেহটি। ডা. বাহার নিজেই মৃত ঘোষণা করেন স্ত্রীর দেহ।


তামান্না আলম বর্তমানে কানাডা প্রবাসী। লেখাপড়া ও বিয়ের পর দেশ ছাড়লেও পারিবারিক কারণে আবার দেশে ফেরেন। ফেরার পর বাবার বিভিন্ন আচরণ ও কথাবার্তায় তিনি সন্দেহে পড়ে যান।

২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর, এক পারিবারিক ঝগড়ার সময় ডা. বাহার তাকে হুমকি দিয়ে বলেন,
"বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর মায়ের মতো অবস্থা হবে, কাকপক্ষীও জানতে পারবে না।"
এই হুমকির পর তামান্না নিশ্চিত হন -- তার মা আত্মহত্যা করেননি বরং তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।


ডা. বাহার এই মামলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তিনি জানান, তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছিলেন এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স এসে তাকে সিলিং ফ্যান থেকে নামায়।

তিনি বলেন,
“তৎকালীন সিভিল সার্জনের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত হয়েছিল, আত্মহত্যা প্রমাণিত হওয়ায় কোনো মামলা হয়নি। স্ত্রীর পরিবার থেকেও কেউ অভিযোগ করেনি।”

ডা. বাহার আরও জানান, তার স্ত্রীর একটি সুইসাইড নোট ছিল এবং তিনি সিআইডিকে তা আদালতে উপস্থাপন করার অনুরোধ করবেন। তিনি আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন এবং বলেন,
“আমি বিচলিত নই, যা বলার আদালতেই বলব।”


বিষয়টি বর্তমানে বিচারাধীন। তদন্ত ও আদালতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করেই সামনে আসবে প্রকৃত সত্য।


📰 আরও খবর: www.shadinpratidin.com
📣 শেয়ার করুন | মতামত দিন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে নির্বাচন ঠেকানো যাবে না: আজিজুল বারী হেলাল

1

কাতারকে রক্ষার ঘোষণা ট্রাম্পের, মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনার

2

মুক্তমত প্রকাশ–সংক্রান্ত ও গায়েবি মামলা ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্

3

পরীমনির ‘এক ডজন বিয়ে’ নিয়ে খোলামেলা স্বীকারোক্তি, জানালেন শে

4

খায়রুল কবির খোকন বললেন, ‘তারেক রহমানই সরকার পতন আন্দোলনের মা

5

অবিবেচনাপ্রসূতভাবে ভ্যাটের হার বাড়ানো হয়েছে: দেবপ্রিয়

6

বরিশালে এক নবজাতককে ৩ দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না, মায়ের বিরুদ্ধ

7

৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস: জাতি গঠনে শিক্ষকদের অবদান অমূল্

8

ফেসবুকে ‘হ্যাঁ-না’ ঝড়: গণভোট ঘিরে নতুন প্রচারণায় সরগরম অনলাই

9

কোন অপশক্তিই নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না: খুলনায় সাংবাদিক

10

কবিসংসদ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি (২০২৫–২০২৬) ঘোষণ

11

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রে বিভ্রান্ত হবে না জনগণ: রুহুল

12

খুলনা বারের নির্বাচন স্থগিত, উত্তেজনায় আইনজীবীরা

13

‘বিটিভি নিউজ’র যাত্রা শুরু

14

শাপলার কলি প্রতীকই বেছে নিল এনসিপি

15

কবি এম এ মান্নান এর কবিতা

16

বাড়ির দোতলায়ও পানি, ভাই–বোনের খোঁজ পাচ্ছেন না গায়িকা পুতুল

17

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরীক্ষায় নকলের দায়ে বহ

18

তাইরান লেখক সম্মেলন-২০২৫: বাংলা একাডেমিতে কবি-লেখকের মিলনমেল

19

মৃত্যু ছাড়া কিছু উপদেষ্টার কোনো সেফ এক্সিট নেই — সারজিস আলম

20