প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০২৫
স্বাধীন প্রতিদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিস্তারিত প্রতিবেদন:
গাজার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাবাহী বহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ এখন চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। আয়োজকরা দাবি করছেন, ইসরাইলি নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজগুলো বহরের মাত্র ১০ নটিক্যাল মাইল দূরত্বে অবস্থান করছে এবং অন্তত দুটি জাহাজকে ঘিরে ফেলার পর তাদের নেভিগেশন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে গেছে।
বহরের আয়োজক ও মানবাধিকারকর্মীরা একে ‘সাইবার হামলা’ বলে অভিযোগ করেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে জাহাজে অবস্থানরত ব্রাজিলীয় মানবাধিকারকর্মী থিয়াগো আভিলা বলেন,
"আমরা এখন যোগাযোগহীন অবস্থায়, আমাদের ন্যাভিগেশন হারিয়ে গেছে। ইসরাইলি বাহিনী আমাদের সাহায্যবাহী জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে আগ্রাসী কৌশল নিচ্ছে।"
‘আলমা’ ও ‘সিরিয়াস’ জাহাজ ঘিরে ফেলেছে যুদ্ধজাহাজ
ফ্লোটিলায় অংশগ্রহণকারী সূত্রগুলো জানায়, ইসরাইলি বাহিনীর দ্রুতগতির দুটি যুদ্ধজাহাজ বহরের ‘আলমা’ ও ‘সিরিয়াস’ নামের জাহাজদ্বয়কে ঘিরে ফেলেছে। এ সময় নেভিগেশন ও কমিউনিকেশন সিস্টেম পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে বলে দাবি করা হয়েছে। আয়োজকরা এই ঘটনাকে ইসরাইলের এক ধরনের "ইলেকট্রনিক আগ্রাসন" হিসেবে চিহ্নিত করছেন।
আন্তর্জাতিক জলসীমাতেই হামলার শঙ্কা
বহরের আয়োজকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক জলসীমার মধ্যে থাকাকালীনই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতিমালার পরিপন্থী।
তাদের দাবি, “আমরা শান্তিপূর্ণ ও মানবিক উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছি, কিন্তু আমাদের থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া এখনও আসেনি
এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার বিষয়ে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা কোনো বড় আন্তর্জাতিক শক্তির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ ও বিবৃতি দ্রুতই আসতে পারে।
অতীতের ছায়া: ২০১০ সালের ‘মাভি মারমারা’ ঘটনার পুনরাবৃত্তি?
এই ঘটনায় অনেকেই স্মরণ করছেন ২০১০ সালের বিতর্কিত ‘মাভি মারমারা’ হামলার কথা। সেবারও গাজাগামী একটি মানবিক সহায়তাবাহী জাহাজে ইসরাইলি বাহিনী হামলা চালিয়েছিল, যাতে ৯ জন তুরস্কের নাগরিক নিহত হয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছিল ইসরাইল।
সংবাদমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণ
এপর্যন্ত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে (যেমন Reuters, Euronews, Daily Sabah, Anadolu Agency) এই ঘটনার খবর উঠে এসেছে। তবে অনেক দাবিই এখনো আংশিকভাবে যাচাইযোগ্য, এবং নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া একপক্ষীয় মন্তব্য বলে বিবেচিত হতে পারে।