ভারতে আশ্রয় নেওয়া পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরব হয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স-কে দেওয়া ই-মেইল সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, দেশে ফিরবেন—তবে একমাত্র শর্তে, দেশে থাকতে হবে বৈধভাবে গঠিত সরকার এবং কার্যকর আইন-শৃঙ্খলা।
অগাস্ট ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও সহিংস আন্দোলনের পর সহস্রাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর ক্ষমতা হারিয়ে ভারতে পাড়ি দেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে দিল্লিতে অবস্থান করছেন তিনি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি দেশে ফিরতে চাই, কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে নয় যেখানে সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে। দেশে প্রকৃত আইনের শাসন ও সংবিধানিক ধারাবাহিকতা ফিরলেই আমি ফিরব।”
শেখ হাসিনা আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ভবিষ্যতে তাঁর বা তাঁর পরিবারের কেউ দলের নেতৃত্বে নাও থাকতে পারেন। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, নতুন প্রজন্মের নেতাদের হাতে দলটির নেতৃত্ব আসতে পারে, যদি আওয়ামী লীগকে পুনরায় বৈধভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রমের সুযোগ দেওয়া হয়।
তবে তার রাজনৈতিক কৌশল ও অবস্থান নিয়ে সমালোচনা কম নয়। তার শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, হত্যাযজ্ঞ, দুর্নীতি ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের অভিযোগ আন্তর্জাতিক ও দেশের পর্যবেক্ষকদের মাঝে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলছে এবং আদালত তাকে অনুপস্থিত অবস্থায় হাজিরার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু নয়াদিল্লি এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি দেশে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নির্বাচন হয় এবং আওয়ামী লীগ পুনরায় রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হতে পারে, তাহলে শেখ হাসিনার ফেরা সম্ভব। তবে চলমান মামলাসমূহ ও বিচারের রায় এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে তার ফেরা এখনও দূরের কল্পনা।
সূত্র: রয়টার্স, ডিডাব্লিউ, দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, আল জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান, এপি নিউজ।
📰 আরও খবর জানতে ভিজিট করুন:
www.shadinpratidin.com
💬 মতামত দিন | 🔁 বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন