স্বাধীন প্রতিদিন প্রতিবেদক
খুলনা | ৮ অক্টোবর ২০২৫
খুলনার প্রভাবশালী আওয়ামী চিকিৎসক নেতার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছেন তার দুই কন্যা। বুধবার (৮ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে ডা. শেখ বাহারুল আলমের দুই মেয়ে শেখ তামান্না আলম ও ডা. তাসনুভা আলম তাদের বাবার বিরুদ্ধে একাধিক অনৈতিক ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, তাদের পিতা ডা. বাহারুল আলম ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ গঠনের নামে একটি নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির চেষ্টা করছেন। শেখবাড়ির ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে খুলনা বিএমএ ভবন ও নিজ বাসভবনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করছেন তিনি। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় যে কোনো সময় তারা খুন বা অপহরণের শিকার হতে পারেন।
সংবাদ সম্মেলনে তামান্না আলম বলেন, ১৯৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর তাদের মা রহস্যজনকভাবে মারা যান। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিলেও, প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যা — যার জন্য তিনি তার বাবাকে দায়ী করেন। তিনি জানান, দীর্ঘ ৩৬ বছর পর এ ঘটনায় তিনি মামলা দায়ের করেছেন।
তাদের অভিযোগ, ডা. বাহারের বিরুদ্ধে খুলনা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন আদালতে ইতোমধ্যে ১২টি মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সোনাডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন দুই বোন।
তামান্না আলম বলেন, ৫০ বছরের পুরনো পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এপিসি ফার্মাসিউটিক্যালস বর্তমানে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে ধ্বংসের মুখে। তিনি দাবি করেন, প্রতিষ্ঠানটির এক সময়কার কর্মচারী হেনা রানী ভৌমিকের সঙ্গে ডা. বাহারের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের ১৮ বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তানও আছে। হেনার স্বামী চিত্ত রঞ্জন সেন এই সম্পর্ক জানার পরও সুবিধা পাওয়ার আশায় মেনে নিয়েছেন।
তারা বলেন, হেনা রানী বর্তমানে বিপুল সম্পদের মালিক। সম্প্রতি তাকে এপিসি ফার্মার ১০ হাজার শেয়ারও লিখে দিয়েছেন ডা. বাহার। অন্যদিকে চিত্ত রঞ্জন সেন ব্যক্তিগত গাড়ির রেজিস্ট্রেশনে ডা. বাহারের বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, স্মার্ট অ্যাগ্রো বিডি নামে একটি কোম্পানির বিনিয়োগের ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন ডা. বাহার। একইসঙ্গে, বড় মেয়ের স্বাক্ষর জাল করে ঢাকার একটি ফ্ল্যাট ৭০ লাখ টাকায় বিক্রি এবং ছোট মেয়ের স্বাক্ষর জাল করে ৩০ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণ তোলার অভিযোগও আনা হয়।
এছাড়া তাদের ফুফুদেরও পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে মামলার কথা জানান দুই মেয়ে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, তার মেয়েরা “প্ররোচিত হয়ে” এসব অভিযোগ করছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “৩৬ বছর পর কেন হঠাৎ এমন অভিযোগ?” ডা. বাহার দাবি করেন, এপিসি ফার্মা তাকে সরিয়ে দিলে কেউ কম দামে প্রতিষ্ঠানটি কিনে নিতে পারবে — সেই কারণেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি শেখ তামান্নাকে কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে নিয়ম বহির্ভূত কাজের কারণে, যা সে মেনে নিতে পারছে না। ডা. বাহার নিজেও আগে আওয়ামী লীগ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করায় দল ও স্বাচিপ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন বলেও জানান।
📰 আরও খবর জানতে ভিজিট করুন:
www.shadinpratidin.com
💬 মতামত দিন | 🔁 শেয়ার করুন