প্রিন্ট এর তারিখঃ Dec 9, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Nov 13, 2025 ইং
একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট — জাতিকে চমকে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকা প্রতিনিধি | স্বাধীন প্রতিদিন
দুপুরের ঠিক ২টা ৩৬ মিনিটে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ভাষণের শুরুতেই তিনি জানিয়ে দিলেন এক যুগান্তকারী ঘোষণা—আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিনেই অনুষ্ঠিত হবে গণভোট। একসঙ্গে ভোট ও গণভোট আয়োজনের এ ঘোষণা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তুমুল আলোচনা।
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে বলেন, “গণভোট আয়োজনের জন্য উপযুক্ত সময়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে।” তিনি জানান, জুলাই সনদের আলোকে গণভোটের ব্যালটের প্রশ্ন ইতিমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। জনগণ চারটি মৌলিক সংস্কারপ্রস্তাবের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত জানাবেন।
অধ্যাপক ইউনূসের ভাষ্যমতে, গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘হ্যাঁ’ ভোট পেলে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত হবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ, যারা ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে। সংস্কার শেষে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে গঠিত হবে উচ্চকক্ষ, যা নিম্নকক্ষের মেয়াদকাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
তিনি বলেন, “এই গণভোট দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে। সংস্কারের যাত্রা কোনো অবস্থাতেই থেমে যাবে না।”
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচারিত এই ভাষণ ঘিরে সারা দেশে তৈরি হয় এক ধরনের প্রত্যাশা ও কৌতূহল। রাজধানীর চায়ের দোকান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস—সর্বত্র আলোচনায় এখন একটাই বিষয়: নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হওয়ার অর্থ কী, এবং এর মাধ্যমে কোন নতুন রাজনৈতিক কাঠামোর জন্ম হতে যাচ্ছে?
অন্যদিকে, ঠিক একই সপ্তাহে রাজনৈতিক অঙ্গনে আরেকটি বড় ঘটনা সামনে আসছে। আগামী ১৭ই নভেম্বর ঘোষণা হবে জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়, যেখানে ক্ষমতাচ্যুত পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও তিনজন অভিযুক্ত। ফলে নির্বাচনের আগে এই রায় ও গণভোট—দুটিই মিলে দেশের রাজনীতিতে ব্যাপক উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তার আবহ তৈরি করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে বলেন, “গণতন্ত্রের মজবুত ভিত্তি স্থাপন করতে চাই আমরা—যেখানে জনগণের ভোটই হবে চূড়ান্ত শক্তি। কেউ বাদ যাবে না, কেউ ভীত হবে না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ঘোষণা এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল। একসঙ্গে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন শুধু প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জই নয়, এটি দেশের ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থার দিকও নির্ধারণ করবে। কেউ একে সাহসী পদক্ষেপ বলছেন, কেউ আবার দেখছেন ঝুঁকিপূর্ণ রাজনৈতিক পরীক্ষা হিসেবে।
যেভাবেই দেখা হোক না কেন, আজকের দুপুরের সেই ঘোষণা ইতোমধ্যেই দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে। এখন সবার চোখ একই দিকে—আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের দিনটি কি শুধুই ভোটের দিন, নাকি বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা?
📰 আরও খবর জানতে ভিজিট করুন:
www.shadinpratidin.com
💬 মতামত দিন | 🔁 বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ স্বাধীন প্রতিদিন, এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।