
নিজস্ব প্রতিবেদক | স্বাধীন প্রতিদিন | খুলনা | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
খুলনার সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গত শনিবার সন্ধ্যায় বেজে উঠেছিল প্রতিরোধের সুর। ‘খুলনা কবি-সাহিত্যিক ফোরাম’-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘জুলাই বিপ্লবের পঙ্ক্তিমালা ও জুলাই পদক ২০২৫’। বেসরকারি ভাবে এধরণের আয়োজন খুলনাতে এটাই প্রথম। ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাইয়ের রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থান ও তার চেতনাকে ধারণ করে এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে উচ্চারিত হয় এক ঐক্যবদ্ধ বার্তা-- “কালচারাল ফ্যাসিজম হটুক, মুক্তচিন্তার শিল্প-সাহিত্য জাগুক”।
খুলনার ঐতিহাসিক উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে কবি, লেখক, সাংবাদিক, আবৃত্তিশিল্পীসহ নানা পেশার সাংস্কৃতিককর্মীরা অংশ নেন। আয়োজন শুরু হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ফ্যাসিবাদবিরোধী ছড়াযুদ্ধের অগ্রনায়ক ছড়াসম্রাট জগলুল হায়দার। সভাপতিত্ব করেন খুলনা কবি-সাহিত্যিক ফোরামের আহ্বায়ক এস এম আয়ুব আলী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা ও পরিচালনা করেন সাইফুল ইসলাম মল্লিক।
ফ্যাসিবাদবিরোধী ছড়াযুদ্ধের অগ্রনায়ক ছড়াসম্রাট জগলুল হায়দার (ঢাকা), ফ্যাসিবাদ বিরোধী জুলাই বিপ্লবের বিশিষ্ট লেখক ও সমালোচক এবং গবেষক কাবেদুল ইসলাম, জুলাই আন্দোলনের গ্রাফিতি সংগ্রাহক ও নজরুল গবেষক সৈয়দ আলী হাকিম (খুলনা), জুলাই বিপ্লবের কাব্যগ্রন্থ "বিপ্লবী পাসওয়ার্ড" এর বিপ্লবী কবি ও সংগঠক এবং সমাজকর্মী আজাদুল হক আজাদ (খুলনা), ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থী জুলাইযোদ্ধা আবদুল্লা আল শাফিল (খুলনা), অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট দিপ্র হাসান (ঢাকা), ছড়াকার ও প্রকাশক কাদের বাবু (ঢাকা) এবং ফটো সাংবাদিক মোহাম্মদ এম এ সাদী (খুলনা)। --এঁদের প্রত্যেককে ‘জুলাই পদক ২০২৫’ প্রদান করা হয়।
আবৃত্তিতে অংশ নেন জনপ্রিয় আবৃত্তিশিল্পী শাহ্ মাখদুম, এস এম শাহরুজ্জামান, সাবিত্রী গাইন নীলিমা, জৈত্রী জিনিয়াস, অম্লান বিশ্বাস শান, অনামিকা সাহা তিন্নী, এবং ঢাকা এসেছিলেন আবৃত্তিকার মৃন্ময় মিজান। তাঁদের কণ্ঠে ফিরে আসে গণআন্দোলনের অগ্নিগর্ভ স্মৃতি এবং নতুন দিনের স্বপ্ন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ আলী হাকিম, সদস্য সচিব অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মোড়ল, খুলনা প্রেসক্লাব আহ্বায়ক এনামুল হক, বিএফইউজের সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম,
সহকারী মহাসচিব বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফ ইউজে এহতেশামুল হক শাওন, খুলনা উকিলবার এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও সাহিত্য সংসদ-এর সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ হোসেন বাচ্চু, কবি ও কথাসাহিত্যিক ফিরোজ আহমেদ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার জামালউদ্দীন মোড়ল, কবি ও গবেষক মনিরুজ্জামান লাভলু, সাংবাদিক আবু আসলাম বাবু, গাঙচিল প্রতিষ্ঠাতা খান আখতার হোসেন, নতুনতারার পরিচালক সাইফুর মিনা, খুসাস সভাপতি জিনারুল ইসলাম, মোহনা সাহিত্য সংসদের প্রতিষ্ঠাতা ওলিউল রহমান, কবি সংসদের সভাপতি এজি রানা, রূসাস প্রতিষ্ঠাতা আসীফ ইকবাল আতিফ, রূসাস ও আমাদের কথা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি বদিউল আলম চৌধুরী, সাহিদা পারভিন এবং কবি নাসিমা সুলতানা নিলুসহ বহু কবি-সাহিত্যিক গুণীজন।
অনুষ্ঠানের প্রতিটি পরতে প্রতিধ্বনিত হয় একটি বার্তা-- সাহিত্য শুধুই বিনোদনের মাধ্যম বা মনের খোরাক নয় বরং তা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের শক্তি ও মুক্তির হাতিয়ার।
সেইদিন খুলনার সন্ধ্যা ছিল কেবল একটি কবিতাপাঠের আসর নয় বরং এক গণঘোষণার মঞ্চ, যেখানে সাহসিকতা, মুক্তচিন্তা এবং মানবিকতা হয়ে উঠেছিল কবিতার পঙ্ক্তি, আবৃত্তির ধ্বনি এবং পদকের সম্মান।
© স্বাধীন প্রতিদিন ২০২৫
সংবাদ উপস্থাপনায়: স্বাধীন প্রতিবেদক দল | প্রকাশকাল: ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫