নিজস্ব প্রতিবেদক | স্বাধীন প্রতিদিন
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় গতি এনেছে বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ধারাবাহিকভাবে বিভাগভিত্তিক মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনা বিভাগের ৩৫টি আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের আজ (সোমবার) বিকেলে গুলশান কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।
খুলনা বিভাগের ১০ জেলার সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছে ইতোমধ্যে ফোন ও ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রের এই আহ্বানে কেউ উচ্ছ্বসিত, আবার কেউ হতাশ। যাদের ফোন গেছে, তারা মনে করছেন এটি মনোনয়ন দৌড়ে প্রাথমিক সাফল্যের ইঙ্গিত। আর যাদের নাম তালিকায় ওঠেনি, তারা এখনো আশায় বুক বেঁধে আছেন—কেউ সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে, কেউ আবার অপেক্ষায় সময় গুনছেন।
দলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত থেকে খুলনা বিভাগের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো শুরু হয় এবং রোববার বিকেল পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া চলেছে। শুধু খুলনা জেলার ছয়টি আসনেই এ পর্যন্ত অন্তত ১৪ জন মনোনয়নপ্রত্যাশীকে বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছে।
খুলনা-১ আসনে ফোন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান ও সাবেক ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমান পাপুল। দীর্ঘদিন সাংগঠনিক চাপে থাকা আমীর এজাজ কেন্দ্রীয় ফোনকে “কাজের স্বীকৃতি” হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে, নতুন প্রজন্মের মুখ জিয়াউর রহমান পাপুল মনে করছেন—দল এবার তরুণ নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
খুলনা-২ আসনে আমন্ত্রণ পেয়েছেন সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। তিনজনই দলের অভিজ্ঞ নেতা হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে দূরত্ব বেড়েছিল। এই বৈঠককে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপিতে নতুন করে প্রাণ ফিরেছে। মঞ্জু অনুসারীরা মনে করছেন, এ আমন্ত্রণ তার সক্রিয় রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত। অন্যদিকে তুহিন ও মনা দুজনেই মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী।
খুলনা-৩ আসনে একমাত্র আমন্ত্রিত হিসেবে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা কেউই বৈঠকের ডাক পাননি। নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম ও সাবেক প্রার্থী শাহ কামাল তাজ জানিয়েছেন, তারা আমন্ত্রণ পাননি। তবে শফি মোহাম্মদ খান এখনো আশা ছাড়েননি—“সময় আছে, কেন্দ্র নিশ্চয়ই বিবেচনা করবে।”
খুলনা-৪ আসনে কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও সাবেক ছাত্রনেতা পারভেজ মল্লিককে বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছে। হেলাল একাধিকবার ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, আর পারভেজ প্রথমবার অংশ নিতে যাচ্ছেন।
খুলনা-৫ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগর লবী শফি মোহাম্মদ খান ও ইবাদুল হক রুবায়েদ এবং খুলনা-৬ আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম, পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল মজিদ, সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন ও আমিরুল ইসলাম কাগজী কেন্দ্রের আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
মন্তব্য করুন