আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক ● স্বাধীন প্রতিদিন
ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘বন্দে মাতারম’–এর ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পার্লামেন্টে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা ও ওয়েনাডের সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র সমালোচনা করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বিতর্ক উসকে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী অভিযোগ করেন—১৯৩৭ সালে কংগ্রেস মুসলিম লীগের চাপে পড়ে বন্দে মাতারম–এর কিছু অংশ বর্জন করেছিল এবং জওহরলাল নেহেরু তৎকালীন মুসলিম সম্প্রদায়ের আপত্তির সঙ্গে একমত হয়েছিলেন। মোদীর দাবি, এই অবস্থানই “তোষণনীতির রাজনীতি”কে শক্তিশালী করে দেশকে বিভাজনের দিকে নিয়ে গিয়েছিল।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তার কঠোর জবাব দিয়ে বলেন, নেহেরুকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সংসদে নেহেরু–সুভাষ বোস ও নেহেরু–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্যকার চিঠিপত্রের অংশ পাঠ করে দেখান যে, নেহেরু এই বিতর্ককে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উৎস হিসেবে দেখেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে বন্দে মাতারম–এর দুটি নির্দিষ্ট স্তবককে গান হিসেবে গ্রহণযোগ্য ও ধর্মনিরপেক্ষ মনে করেছিলেন বলেই এগুলো আলাদাভাবে গাওয়া হতো। ঠাকুর আরও মত দেন, অতিরিক্ত স্তবকগুলো সাম্প্রদায়িক ব্যাখ্যার সুযোগ তৈরি করতে পারে।
প্রিয়াঙ্কার অভিযোগ—সরকার বাস্তব সমস্যাগুলো থেকে মনোযোগ সরাতে সাংস্কৃতিক ইস্যুকে সামনে আনছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“যে কাজের জন্য জনগণ আমাদের নির্বাচিত করেছেন, সংসদের মূল্যবান সময় তা নিয়েই ব্যয় হোক।”
ডিএমকে নেতা এ রাজাও প্রিয়াঙ্কার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হন। তিনি বলেন, নেহেরুর অবস্থানকে বিকৃত করে তুলে ধরা হচ্ছে, যদিও নেহেরু নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে কিছু অংশ মানুষের ধর্মীয় সংবেদনশীলতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
১৮৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রথম বন্দে মাতারম প্রকাশ করেন বঙ্গদর্শন পত্রিকায়। পরে তা অন্তর্ভুক্ত হয় তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘আনন্দমঠ’–এ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুরে গানটি স্বাধীনতা আন্দোলনে জাতীয়তাবাদীদের সংগ্রামের প্রতীক হয়ে ওঠে এবং দেশজ অনুভূতির অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়।
গত ৭ নভেম্বর গানটির ১৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করা হয়।
টিজে/টিকে
📰 আরও খবর জানতে ভিজিট করুন:
www.shadinpratidin.com
💬 মতামত দিন | 🔁 বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন