মাত্র ১১ জন ব্যাটার অর্জন করেছেন শততম ম্যাচে সেঞ্চুরির মতো বিরল কৃতিত্ব
স্টাফ রিপোর্টার | স্বাধীন প্রতিদিন
বাংলাদেশ ক্রিকেটের গর্ব মুশফিকুর রহিম তার ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট ম্যাচটিকে স্মরণীয় করে তুললেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার কীর্তি গড়াই ছিল অনন্য সাফল্য; তার ওপর সেঞ্চুরি করে এই ম্যাচটিকে তিনি এক ঐতিহাসিক উচ্চতায় নিয়ে গেলেন। বিশ্ব ক্রিকেটের দেড়শ বছরের ইতিহাসে এতদিন মাত্র ৮৪ জন ক্রিকেটারই শততম টেস্টের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। এর মধ্যে মাত্র ১১ জন ব্যাটার অর্জন করেছেন এই ম্যাচে সেঞ্চুরির মতো বিরল কৃতিত্ব। সেই মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় নিজের নাম তুলে মুশফিক আবারও প্রমাণ করলেন—বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মুখ তিনি।
মুশফিকের এই সাফল্যে দেশজুড়ে আনন্দের বন্যা বইছে। শুধু বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তরাই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ব্যাটার ও সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্টে সেঞ্চুরিকে অসাধারণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে তার ধারাবাহিকতা, নিবেদন ও দৃঢ়তার প্রশংসা করে পন্টিং জানিয়েছেন—এমন পারফরম্যান্স যে কোনো দেশের ক্রিকেটের জন্যই গর্বের।
মুশফিককে নিয়ে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক এবং সতীর্থ মাশরাফি বিন মোর্তজা। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, দেশের ক্রিকেট বাস্তবতায় মুশফিকের এই অর্জন অসাধারণ। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা, নিবেদন ও প্যাশন যে আলাদা, সেটিও তুলে ধরেন মাশরাফি। দীর্ঘ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে টপ লেভেলে খেলে যাওয়াকে তিনি গর্বের বিষয় উল্লেখ করে বলেন—মুশফিককে দেখে নতুন প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে, টেস্টে বড় ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখবে। পরিচিত রসিকতায় মুশফিককে ‘বান্টু দা’ সম্বোধন করে শুভকামনাও জানান তিনি।
সমান আবেগ নিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাকিব আল হাসানও। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে মুশফিকের সঙ্গে টেস্ট ম্যাচের একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন—লর্ডসে মুশফিকের খেলা প্রথম টেস্ট ম্যাচের প্রতিটি বল তিনি দেখেছিলেন বিকেএসপির বিনোদন কক্ষে বসে। সেদিন থেকেই মুশফিক তার অনুপ্রেরণা। বয়সভিত্তিক দলে খেলার সময় থেকেই মুশফিককে নিজের অধিনায়ক হিসেবে দেখেন সাকিব; এখনও এবং ভবিষ্যতেও সেটা একই থাকবে। মুশফিকের এই শততম টেস্টকে তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক বিশাল অর্জন হিসেবে বর্ণনা করেন। এমনকি প্রথম ম্যাচের মতো শততম টেস্টের প্রতিটি বলও তিনি দেখবেন বলে জানান। পাশাপাশি আক্ষেপ প্রকাশ করেন—ইচ্ছে ছিল মাঠে একসঙ্গে থেকে এই মাইলফলক উদ্যাপন করার।
সেঞ্চুরি, সতীর্থদের শুভেচ্ছা, আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মহলে প্রশংসার ঢল—সব মিলিয়ে মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্ট সত্যিই এক অনন্য অধ্যায় হয়ে থাকল। তার পরিশ্রম, মানসিক দৃঢ়তা ও টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি অগাধ ভালোবাসা আগামী প্রজন্মের জন্য হয়ে থাকবে অনুকরণীয়। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে গর্বের এই মুহূর্তে দেশজুড়ে আনন্দ আর শুভেচ্ছার বার্তাই বলে দিচ্ছে—মুশফিক শুধু একজন ক্রিকেটার নন, তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম স্তম্ভ।
📰 আরও খবর জানতে ভিজিট করুন:
www.shadinpratidin.com
💬 মতামত দিন | 🔁 বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন