রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে ঘটে গেল নিন্দনীয় এক ঘটনা—সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন জাতীয় দৈনিক আমার দেশ-এর স্টাফ রিপোর্টার জাহিদুল ইসলাম। ঘটনার সময় তিনি গুরুতর আহত হন, এবং হামলাকারীরা তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে।
সূত্রে জানা গেছে, এদিন বিএনপির সিলেট বিভাগীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে একাধিক গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্যদের সাথে জাহিদুল ইসলামও সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। একপর্যায়ে সভাকক্ষের সামনে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির একটি দৃশ্য তিনি মোবাইলে ধারণ শুরু করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলটির গুলশান অফিসে কর্মরত কিছু ব্যক্তি।
বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, আমরা বিএনপি নামক একটি মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্যামেরাপারসন ফয়সলের নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি জাহিদুলের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। তারা জাহিদুলকে দোতলার সিঁড়ির দিকে টেনে নিয়ে গিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এ সময় তারা জাহিদুলের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে এবং তার পরিচয়পত্রও ছিনিয়ে নেয়।
হামলাকারীরা জাহিদুলকে উদ্দেশ্য করে বারবার বলেন, “আমার দেশ বিএনপির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করছে। এখানে বিএনপির দোষ খুঁজতে রিপোর্টার পাঠিয়েছে।” এরকম মন্তব্য করে তারা সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রকাশ্য বাধা সৃষ্টি করে, যা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী।
পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত, যদি না অন্য পত্রিকাগুলোর বিএনপি বিট কভার করা রিপোর্টাররা এগিয়ে এসে জাহিদুলকে উদ্ধার করতেন। তাদের তৎপরতায় বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
সাংবাদিকদের ওপর এমন ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় দেশের গণমাধ্যম অঙ্গনে নিন্দার ঝড় বইছে। বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) ও প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে সেটি গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত।”
এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর বা মিডিয়া সেল থেকে হামলার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, দলটির ভেতরের দ্বন্দ্ব ও মিডিয়া ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ ঘিরেই এই হামলার সূত্রপাত।
এটি মুক্ত সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি উঠেছে সর্বমহলে।
📰 আরও খবর জানতে ভিজিট করুন: www.shadinpratidin.com 💬 মতামত দিন | 🔁 বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
মৃত্যু ছাড়া কিছু উপদেষ্টার কোনো সেফ এক্সিট নেই — সারজিস আলম